♦বিগত কয়েক মাস থেকে সনাতন ধর্মের ও শ্রী ভগবত গীতা প্রচারের মাধ্যমে বর্তমান যুবসমাজকে সৎ কর্মের দিকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সমগ্ৰ ভারতবর্ষে বিনা সাহায্যে ভ্রমন করে চলছেন। বর্তমানে শ্রীমৎ স্বামী সর্বারুদ্র মহারাজ পনেরোটি রাজ্যে প্রচার করে এবার শিলচরে প্রচারের উদ্দেশ্যে সোনাই রোড মহাপ্রভু সরনীস্থিত শিলচর শঙ্কর মঠ ও মিশনে পদার্পণ করেছেন। শিলচরে প্রচারে এসে স্বামী সর্বারুদ্র মহারাজ খুবই আনন্দ ব্যক্ত করে বলেন, তিনি সন্ন্যাস জীবন গ্ৰহন করার পূর্বে তিনি ইউপি রাজ্যের একটি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন কিন্তু তিনি সনাতন ধর্মকে জানার ও বোঝার লক্ষ্যে সেই অধ্যাপকের চাকুরী স্বইচ্ছায় ছেড়ে সুদূর হিমালয় পর্বতে গিয়ে তিন বৎসর তপস্যার পূর্বে সমগ্ৰ ভারতবর্ষ ভ্রমনের জন্য বেরিয়েছেন এবং তিনি আরো বলেন,হিন্দু ধর্মের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সংস্কৃতি, আজ থেকে ৬,০০০ হাজারেরও বেশি বছর ধরে যা বিকাশ লাভ করে চলেছে পুণ্যভূমি ভারতে। হিন্দু ধর্মের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভাগ, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য শৈব, বৈঞ্ষব, শাক্ত, বেদ এবং তান্ত্রিকবাদ। হিন্দুধর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিভিন্ন আদিবীসা সম্প্রদায়ের রীতি-নীতিও, যাকে বর্তমান সময়ে আলাদা ভাবে খুঁজে বার করা খুবই কঠিন কাজ। হিন্দুধর্মের মধ্যে রয়েছে নানা দর্শন। এই দর্শনের মধ্যে রয়েছে যোগ, ন্যায়, সমক্ষ, বৈশেশিকা, মিমাংসা এবং বেদান্ত। সনাতন ধর্ম হচ্ছে সম্পূর্ণ জীবন দর্শন।আমাদের দেশের যুবসমাজ যদি সেই সনাতন ধর্ম ও শ্রী ভগবত গীতাকে জীবনে অনুসরন করে চলেন, তাহলে আমাদের দেশ কখনো অধঃপতনের দিকে যাবেনা।শিলচর শঙ্কর মঠ ও মিশনের কর্মাধ্যক্ষ শ্রীমৎ বিজ্ঞানানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ প্রথমে শ্রীমৎ স্বামী সর্বারুদ্র মহারাজকে সনাতন ধর্ম ও গীতা প্রচারের উদ্দেশ্যে সমগ্ৰ ভারত ভ্রমনের উদ্দেশ্যের জন্য আন্তরিক ভাবে সাধুবাদ জানান এবং বলেন, শ্রী ভগবত গীতা সনাতন ধর্মের উপদেশমূলক একটি দার্শনিক গ্রন্থ। শ্রী ভগবত গীতা অনুযায়ী সনাতন ধর্ম একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তা বহুযুগ পার হয়ে মানব সমাজে আবির্ভূত একটি চিরন্তন ধর্ম। গীতায় ব্যবহূত ‘ধর্ম’ শব্দটি নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়ের বিশ্বাসকে নির্দেশ করে না। এ শব্দটি দ্বারা এমন একটি বিশ্বাসকে নির্দেশ করা হয়েছে, যা ধর্ম -বর্ণ -নির্বিশেষে সকল মানুষই অনুশীলন করতে পারে। তা হলো মানুষের গুণগত বা পেশাগত ধর্ম। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পূর্বে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে এই ধর্ম পালনের কথাই জোর দিয়ে বলেছেন। সনাতন ধর্মের অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো ফলের প্রত্যাশা না করে কর্ম করা। সেদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমৎ মনোজানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ সহ উক্ত মিশনের কর্মকর্তাবৃন্দরা।